দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের পাতিগ্রাম মোড়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কয়লা উত্তোলনের কারণে পাতিগ্রাম ও পাঁচঘরিয়াসহ কয়েকটি গ্রামের বাসাবাড়ি কম্পনে ফেটে যাওয়ায় ভূমি ও বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের পাতিগ্রাম মোড়ে ভূমি ও বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির সভাপতি মো. মতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ শেষে পাতিগ্রাম মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে ভূমি ও বসতবাড়ি রক্ষা কমিটির সভাপতি মতিয়ার রহমান বলেন, আমরা ৬ দফা মেনে নেয়ার জন্য খনি কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগাদা দিয়েছি। কিন্তু আমাদের কোন কথা কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিচ্ছে না। ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নের মধ্যে রয়েছে পাঁচঘরিয়া ও পাতিগ্রামের বাড়িঘরগুলি কয়লা তোলার কারণে ফেটে যাচ্ছে, আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে তা দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, চলাচলের জন্য প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে, তা দ্রুত পুনর্নির্মাণ করতে হবে।
সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে ফান্ড দিতে হবে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর সাথে সমঝোতা চুক্তি মোতাবেক বেকারদের চাকরি ও ভূমি অধিগ্রহণ করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। খনি কর্তৃপক্ষ সমঝোতা চুক্তি ভঙ্গ করে বহিরাগতদেরকে চাকরি দেয়া বন্ধ করতে হবে, পূর্বের অধিগ্রহণকৃত মসজিদ কবরস্থানগুলোর বিষয়ে জায়গা অধিগ্রহণ করে মসজিদ ও কবরস্থানের জায়গা নির্ধারণ করে দিতে হবে।
পাতিগ্রাম ও পাঁচঘরিয়া গ্রামে বসবাসরত ৪ হাজার পরিবারের মাঝে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নে খনি কর্তৃপক্ষ ও পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং এমপিকে অবগত করলেও আজ পর্যন্ত কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে না। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে আর কতদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ২টি গ্রামে বসবাস করব? এই এলাকার ভূ-গর্ভ থেকে কয়লা তোলার কারণে প্রতিনিয়ত দেবে যাচ্ছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কর্মকর্তা কর্মচারীরা লাভবান হলেও এলাকার গ্রাম ২টি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা অতি দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি আমাদেরকে বাঁচান, তা না হলে এই যন্ত্রণা থেকে মৃত্যু অনেক ভালো।
পাতিগ্রামের আইয়ুব আলী, পাঁচঘরিয়া গ্রামের মোজাহার আলী, আব্দুল কাদের, মোছা. হেলেনা খাতুনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, নলকুপে পানি উঠছে না, এ এলাকায় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসাগুলিতে যাওয়ার রাস্তা থাকলেও বর্ষাকালে চলাচল করা সম্ভব হয়না।
সমস্ত রাস্তা খনির কারণে মাটির নিচে তলিয়ে গেছে। নেই কোন মসজিদ, নামাজ পড়ার ঈদগাহ মাঠ এবং ফুটবল খেলার মাঠসহ সব ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা এর প্রতিকার চাই ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
এই বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
টিএইচ